= পালি নাম: কস্সপ বোধিসত্ত।
কশ্যপ বোধিসত্ত্ব নাকি আট অসংখ্য কল্প এবং আরো এক লক্ষ কল্প ধরে পারমী পূরণ করে বারাণসীতে ব্রহ্মদত্ত ব্রাহ্মণের স্ত্রী ধনবতী ব্রাহ্মণীর গর্ভে প্রবেশ করেছিলেন। তার অগ্রশ্রাবক বা প্রধান শিষ্যও সেদিনে দেবলোক থেকে চ্যুত হয়ে দ্বিতীয় প্রধান পুরোহিতের স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নিয়েছিল। এভাবে তাদের একই দিনে গর্ভে প্রবেশ, একই দিনে গর্ভ থেকে বের হওয়া বা জন্মগ্রহণ এবং একই দিনে তাদের নামকরণ হলো। একজনের নাম হলো কশ্যপ, আরেকজনের নাম হলো তিষ্য। তারা সেই ছোটবেলায় ধুলাবালি দিয়ে খেলা করার সময় থেকেই একসাথে বড় হলো।
তিষ্যের পিতা একসময় তিষ্যকে আদেশ দিল এভাবে, বাপু, এই কশ্যপ গৃহত্যাগ করে প্রব্রজিত হয়ে বুদ্ধ হবে। তুমিও তার কাছে প্রব্রজিত হবে, যাতে এই ভবসংসার থেকে মুক্ত হতে পার। তা শুনে সে সাধু বলে সম্মতি দিয়ে বোধিসত্ত্বের কাছে গিয়ে বলল, বন্ধু, আমরা উভয়েই প্রব্রজ্যা নেব। বোধিসত্ত্ব সাধু বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন। এরপর বড় না হতেই তিষ্য বোধিসত্ত্বকে বলল, “এসো বন্ধু, প্রব্রজ্যা নিই।” কিন্তু বোধিসত্ত্ব বের হলেন না। তখন তিষ্য ভাবল বোধিসত্ত্বের জ্ঞান এখনো পরিপক্ক হয় নি। তাই সে নিজেই ঘর থেকে বের হয়ে ঋষি প্রব্রজ্যা নিয়ে অরণ্যের কোনো এক পর্বতের পাদদেশে আশ্রম বানিয়ে বসবাস করতে লাগল।
পরে বোধিসত্ত্বও ঘরে বসেই আনাপান স্মৃতি ভাবনা করে চারি ধ্যান এবং অভিজ্ঞা বা বিশেষ জ্ঞান লাভ করে প্রাসাদে করে উড়ে গিয়ে বোধিমণ্ডপ বা বুদ্ধত্ব লাভের স্থানের কাছে গিয়ে হাজির হলেন। এরপর অধিষ্ঠান করলেন, এই প্রাসাদ আগের স্থানে ফিরে যাক। তার অধিষ্ঠানবলে সেটি আগের স্থানে ফিরে গেল।
বুদ্ধত্ব লাভ করতে গিয়ে বোধিসত্ত্বের অবশ্যই প্রব্রজিত হতে হয়। প্রব্রজিত না হয়ে নাকি বোধিমণ্ডপ বা বোধি আসনে যাওয়া যায় না। তাই কশ্যপ বোধিসত্ত্বও প্রব্রজিত হয়ে বোধিমণ্ডপে হাজির হয়ে সাত দিন সাধনা করে সম্যকসম্বোধি প্রাপ্ত হলেন।