রেফারেন্স: মঘের কাহিনী
বৈশালিতে মহালি নামের একজন লিচ্ছবি থাকত। সে তথাগতের সক্কপ্রশ্ন সুত্র দেশনা শুনে ভাবল, “সম্যকসম্বুদ্ধ সক্কের গুণের মহাপ্রশংসা করেছেন। সেটা কি তিনি দেখে বলেছেন নাকি নাদেখে বলেছেন? তিনি কি সক্ককে চেনেন নাকি চেনেন না? আমি বরং তাকে ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করব।” এই ভেবে মহালি লিচ্ছবি ভগবানের কাছে গিয়ে হাজির হল। ভগবানকে অভিবাদন জানিয়ে একপাশে বসল। একপাশে বসে মহালি লিচ্ছবি ভগবানকে জিজ্ঞেস করল, “ভান্তে কি দেবরাজ ইন্দ্র সক্ককে দেখেছেন?”
“হ্যাঁ, মহালি। আমি দেবরাজ ইন্দ্র সক্ককে দেখেছি।”
“ভান্তে, সেটা মনে হয় সক্কের রূপ ধরে থাকা অন্য কেউ হবে। কারণ দেবরাজ ইন্দ্র সক্ককে দেখতে পাওয়াটা খুবই কঠিন।”
“সক্ককে আমি খুব ভালো করে চিনি, মহালি। সক্ক হওয়ার মতো বিষয়গুলো, অর্থাৎ যে যে বিষয়গুলো সম্পাদনের কারণে সক্ক তার এই অবস্থানে পৌঁছেছেন, সেটাও আমি ভালো করে জানি।
এরপরে বুদ্ধ মহালিকে দেবরাজ ইন্দ্রের অতীতের মঘ জন্মের সময়কার সাতটি ব্রতের কথা বললেন। পরে মহালি বিস্তারিত শুনতে চাইলে মঘের কাহিনীও বললেন বিস্তারিত করে। কাহিনী শেষে বুদ্ধ তখন এই গাথা বললেন,
৩০. মাতাল হন নি বলে মঘবান, দেবতাদের মধ্যে সেরা হতে পেরেছেন।
মাতাল না হওয়াটা প্রশংসনীয়, মাতাল হওয়াটা সর্বদা নিন্দনীয়।
এখানে মাতাল হন নি বলে মানে হচ্ছে মচল গ্রামে দাঁড়ানোর জায়গাটুকু পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে মাতাল না হয়ে কৃত কাজগুলোর মাধ্যমে। মঘবান মানে হচ্ছে বর্তমানে মঘবান নামে পরিচিত অতীত জন্মের মঘ নামের যুবকটি, যিনি দুই দেবলোকের রাজা হওয়ার কারণে দেবতাদের মধ্যে সেরা হতে পেরেছেন। প্রশংসনীয় মানে হচ্ছে বুদ্ধ ইত্যাদি পণ্ডিতগণ অপ্রমাদ বা মাতাল না হওয়াটাকেই প্রশংসা করেন, গুণগান করেন। কী কারণে? লৌকিক ও লোকোত্তর বিষয়গুলো লাভ করা যায় বলে। মাতাল হওয়াটা সর্বদা নিন্দনীয় মানে হচ্ছে প্রমাদ বা মাতাল হওয়াটা আর্যগণের নিত্য নিন্দিত। কী কারণে? সকল প্রকার পরিহানির মূল কারণ হয় বলে। মানুষ হয়েও দুর্গত অবস্থায় পড়া, অথবা অপায় বা দুঃখময় ভূমিতে জন্মানো ইত্যাদি সবই হচ্ছে প্রমাদ বা মাতাল হওয়ার কারণে।
গাথা শেষে মহালি লিচ্ছবী স্রোতাপত্তি ফলে প্রতিষ্ঠিত হল। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে বহু লোক স্রোতাপন্ন ইত্যাদি হয়ে গেল।